১৯৯৫-৯৬ সালের দিকে আমরা কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলাধীন ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের ঠাকুরতলা-ডেইলপাড়ার কয়েকজন জনাব আবুল কালামের দোকানে(ম-ক্কার দোয়ানে) অত্র এলাকায় একটি পাঠাগার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে একমত পোষণ করি। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা কিছু বই-পুস্তক সংগ্রহ করি এবং তা পাঠের ব্যবস্থা করি। পরে আমরা বিভিন্ন কারণে ব্যর্থ হই। পরবর্তীকালে ২০০৩ খ্রি. বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গায় এই বিষয়ে আলোচনা করি। এই ২০০৩ সালে আমরা সবাই এ বিষয়ে ঐক্যমত পোষণর্পূবক অত্র এলাকায় একটি পাঠাগার স্থাপনের কাজ শুরু করি এবং নামকরণ করলাম ওর্য়াল্ড এমাটি লাইব্রেরি। এই পাঠাগারের কিছু বই-পুস্তক আমাদের একজন সদস্যের নিকট থাকত, তার কাছ থেকে অন্যান্যরা ধারে বই পড়ে আবার জমা দিত। এভাবে আমাদের সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। নিয়মিত-অনিয়মিতভাবে আমাদের সীমিত আকারের পাঠাগার চালু হয়।
২০২০ খ্রিস্টাব্দের বৈশ্বিক মহামারি (কোভিড-১৯) এর লকডাউনের সময়ে মার্চ মাসে এলাকার শিক্ষার্থীসহ চাকুরীজীবীরা যখন এলাকায় চলে আসেন, তখন তাঁরা নতুন করে এই ওর্য়াল্ড এমাটি লাইব্রেরিকে কিভাবে আরো বেশি কার্যকর করা যায় তা নিয়ে চিন্তা করেন। এই চিন্তা থেকেই ওর্য়াল্ড এমাটি লাইব্রেরি নবরূপে কর্মকাণ্ড শুরু করে। এই সময়ে ডেইলপাড়ার মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুবিধা বঞ্চিত মেধাবী শিক্ষার্থী তারেকুর রহমান (পিতা জনাব আবুল কালাম সওদাগর) ওয়ার্ল্ড এমাটি লাইব্রেরির সদস্য পদ লাভের মাধ্যমে পাঠাগারের প্রতিষ্ঠিত সদস্যবৃন্দের সান্নিধ্যে আসেন। বিগত ২১শে জুলাই, ২০২১ তারিখে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড এমাটি লাইব্রেরির সাধারণ সভায় উপস্থিত সম্মানিত সদস্যবৃন্দ গ্রন্থাগারের পাঠকক্ষকে সরব করার জন্য এলাকার একজন ভাল ও মেধাবী শিক্ষার্থীকে গ্রন্থাগারিকের দায়িত্ব প্রদানের জন্য প্রস্তাব করলে উপস্থিত কয়েকজন তারেকুর রহমান নামটি বলেন। লাইব্রেরির এই সাধারণ সভায় উপস্থিত সম্মানিত সদস্যবৃন্দের সম্মতিতে তাঁকে গ্রন্থাগারিকের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। সেই থেকে তিনি গ্রন্থাগারের পাঠকক্ষকে সরব করে তোলেন। তিনি পরিচিত পাঠক ও বন্ধুদের নিয়ে দলভিত্তিক পড়াশোনা শুরু করেন। ওয়ার্ল্ড এমাটি লাইব্রেরির পড়াশোনার পরিবেশ সৃষ্টি করতে তিনি সফল হন।
ওয়ার্ল্ড এমাটি লাইব্রেরির সম্মানিত সদস্য ও গ্রন্থাগারিক (লাইব্রেরিয়ান) জনাব তারেকুর রহমান ২০২২ সালে এস.এস.সি. পরীক্ষায় মহেশখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় হতে অংশ গ্রহণ করে বিজ্ঞান বিভাগ হতে গোল্ডেন এ + অর্জন করেন। তারেকের পিতা জনাব আবুল কালাম সওদাগর(ডেইলপাড়ার মক্কা-র দোয়ান নামে খ্যাত দোকানের মালিক)। ওয়ার্ল্ড এমাটি লাইব্রেরির পড়াশোনার পরিবেশ তাঁর সফলতায় অবদান রাখছে বলে তিনি মনে করেন। তিনি মহান আল্লাহর অনুগ্রহ, তাঁর প্রচেষ্টা, ওয়ার্ল্ড এমাটি লাইব্রেরির প্রতিষ্ঠাতা সদস্যবৃন্দের অনুপ্রেরণা, শিক্ষকবৃন্দের সহযোগিতা, মাতা-পিতা ও আত্মীয় স্বজনের দোয়ায় ভাল ফলাফল লাভ করায় সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। আমরা তাঁর সাফল্যে তাঁকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। সবার নিকট তাঁর উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য দোয়া কামনা করছি।
আলহামদুলিল্লাহ। এই বছর আমাদের ওয়ার্ল্ড এমাটি লাইব্রেরীর ১১ জন এস.এসসি./দাখিল-সমমান পরীক্ষায় সাফল্য অর্জন করেন। তাঁদেরকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন।
(১) তারেকুর রহমান গোল্ডেন: এ +
(২) মশহুদ মুক্তাদীর আল হাসনাইন: এ+
(৪) আশরাফ আল হাসান: এ
(৫) মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসাইন: এ
(৬) এম এ শাহরিয়ার হাসান সুমন: এ
(১০) মোবারক হোসাইন: এ
(১১) ছোটন: এ-
এছাড়াও এসএসসি, দাখিল ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সকলের জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইলো।
0 Comments